শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১১

উন্নয়নশীল দেশে ইন্টারনেট ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ জাতিসংঘের

Sahab Uddin:
আগামী চার বছরের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মোট দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অর্ধেক অংশের মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌছানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছে জাতিসংঘ। আর আগামী ২০১৫ সালের মধ্যে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানকে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে দিয়েছে জাতিসংঘের ব্রডব্যান্ড কমিশন ফর ডিজিটাল ডেভলপমেন্ট প্যানেল।
তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সর্বব্যাপী উন্নয়ন গতিকে আরো ত্বরান্বিত করতে গৃহীত ‘চার অ্যজেন্ডা’য় এ লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। গত সোম ও মঙ্গলবার দু’দিন ধরে জাতিসংঘের সদর দফতর জেনেভায় অনুষ্ঠিত ‘আইটিইউ (ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন) টেলিকম ওয়ার্ল্ড ২০১১’ শীর্ষক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বৈঠকে গৃহীত অ্যাজেন্ডাগুলো হলো- দ্রুততার সঙ্গে জাতিসংঘভুক্ত প্রতিটি দেশকেই একটি সমান্তরাল জাতীয় ব্রডব্র্যান্ড পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী যেন এন্ট্রি-লেভেল ব্রডব্যান্ড সেবা পেতে পারে সে জন্য নীতিমালায় পর্যাপ্ত প্রবিধান অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। একই সঙ্গে গড়ে অন্তত পাঁচ শতাংশ মাসিক আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে একটি সুসংহত মার্কেট ফোর্স তৈরি করতে হবে।
 
এ ছাড়া উন্নয়নশীল দেশগুলোর কমপক্ষে ৪০ শতাংশ বাড়িতে ব্রডব্যান্ড সেবা পৌঁছানোর জন্য বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬০ শতাংশ বাড়ানোরও। এর মধ্যে উন্নয়নশীল দেশে ৫০ শতাংশ এবং অপেক্ষাকৃত কম উন্নত দেশের ১৫ শতাংশ মানুষকে এ পরিকল্পনার আওতায় আনার একটি রূপরেখা তৈরি করা হযেছে। আর ২০১৫ সালের মধ্যে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বৈঠক শেষে এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন জতিসংঘের টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন প্রধান হামাদান টরি। পরিকল্পনা সফলতায় আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “পদক্ষেপ উচ্চাকাঙ্ক্ষী হলেও সরকারি-বেসরকারি এবং সস্বায়ত্বশাসিত ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজ করলে লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।”
ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ড সেবা অতি দরিদ্র দেশগুলোতে সাশ্রয়ী করার প্রতি গুরুত্বরোপ করে তিনি বলেন, “বিশ্ব উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে এবং দেশের মানুষকে এগিয়ে নিতে এর কোনো বিকল্প নেই। প্রযুক্তিকে জীবনের সাথে খাপ খাওয়াতে না পারলে এসব দেশ আরও পিছিয়ে পড়বে।”
তিনি আরো বলেন, “লক্ষ্য অনুযায়ী কোন দেশ কতটা কাজ করছে তা পর্যবেক্ষণে আইটিইউ নিয়মিত দেখ-ভাল করবে। ব্রডব্যান্ড সেবাকে প্রত্যেকের হাতের নাগালে নিয়ে আসতে জাতিসংঘভুক্ত দেশগুলোতে জরিপ চালিয়ে খুব সতর্কতার সঙ্গে প্রতি বছর একটি ব্রডব্যান্ড রিপোর্ট তৈরি করা হবে। আর এর মাধ্যমে দেশগুলোর সরকার প্রধানরা যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছেন কি-না সে বিষয়েও কড়া নজরদারি করা হবে।
  প্রসঙ্গত, গত বছরের মে মাসে আইটিইউ গঠনের পর চতুর্থ বৈঠকে এমন উচ্চাভিলাষী সিদ্ধান্ত নেয় জাতিসংঘ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন