শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১১

‘দোয়েল’র উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

Sahab Uddin:
সরকার স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্যে স্বল্পমূল্যে সকল বিষয়ের পাঠ্যবই সম্বলিত ল্যাপটপ দেয়ার পরিকল্পনা করায় স্কুল পাঠ্য বিশাল বইয়ের বোঝা বহন শিক্ষার্থীদের জন্য আর বোঝা নয় বরং আনন্দের হয়ে উঠবে।
মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) দেশে তৈরি ল্যাপটপ ‘দোয়েল’-এর বিতরণ ও বাজারজাতকরণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অত্যন্ত হালকা এ নোটবুক (ল্যাপটপ) সহজেই শিশু শিক্ষার্থীদের ব্যাগে রাখা যাবে। এতে শিক্ষার্থীরা বইয়ের ভারী বোঝা বহন থেকে মুক্তি পাবে, যা তাদের শিক্ষা গ্রহণকে আনন্দময় করে তুলবে।”
তিনি জানান, জনগণের অর্থের কার্যকর ও সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষে মুক্তিযোদ্ধা ও বিধবা ভাতাসহ সরকার পরিচালিত সকল কর্মকাণ্ডই ক্রমান্বয়ে ডিজিটালাইজড করা হবে।
শেখ হাসিনা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের প্রতি তাদের লাইবেরিকে ই-লাইব্রেরিতে রূপান্তরিত করতে আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে মুখ্য ভূমিকা পালনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টিএসএস) বেসরকারি সংস্থা ২এম করপোরেশনের সহযোগিতায় ‘দোয়েল’-এর চার ধরণের ল্যাপটপ বাজারে ছেড়েছে, যার দাম রাখা হবে ১০ হাজার থেকে ২৬ হাজার টাকার মধ্যে।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাজিউদ্দিন রাজু, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি চেয়ারম্যান হাসানুল হক ইনু, মন্ত্রণালয়ের সচিব সুনীল বোস। প্রধানমন্ত্রী দু’জন মুক্তিযোদ্ধা ও দু’জন প্রতিবন্ধী ছাত্রের মাঝে চারটি ল্যাপটপ প্রদানের মাধ্যমে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

নির্বাচনী অঙ্গীকারের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “দোয়েলের বিপনন ও বাজারজাতকরণ ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে ‘দিন বদলের সনদ’ বাস্তবায়নের পথে এক বড় ধরণের পদক্ষেপ।”

তিনি বলেন, “তথ্য প্রযুক্তির সম্প্রসারণের ফলে বিদ্যুতের ব্যবহার বেড়ে যাচ্ছে। এ জন্য আমাদেরকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ব্যবহারের পাশাপাশি বিদ্যুৎ ব্যবহারে কৃচ্ছতা সাধন করতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সাধারণ মানুষের কাছে স্বল্প মূল্যে মোবাইল ফোন পৌঁছে দিতে একটি বেসরকারি কোম্পানির একচেটিয়া ব্যবসার অবসান ঘটানো হয়েছে।”

তিনি গত তিন বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নে তার সরকারের নেয়া ব্যবস্থাগুলোর উল্লেখ করে বলেন, “আমরা ২০২১ সালের মধ্যে প্রযুক্তি ও জ্ঞানভিত্তিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ এক বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গিকারবদ্ধ।”

দেশের সব অঞ্চলকে ই-গভর্ননেন্সের আওতায় আনা হবে এবং ডিজিটাল বিভাজন দূর করতে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “খুলনায় রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বাংলাদেশ ক্যাবল ইন্ডাস্ট্রিতে অপটিক্যাল ফাইবার তৈরির পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যা দ্রুত গতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সার্ভিস পেতে সহায়তা করবে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সরকার সাবমেরিন ক্যাবলের বিদ্যমান ব্যান্ডউইথ ক্যাপাসিটি সাড়ে ৭ গিগাবাইট থেকে ১৪০ গিগাবাইটে উন্নীত করা এবং ব্যান্ডউইথের প্রতি গিগাবাইটের ফি ২৭ হাজার টাকা থেকে হ্রাস করে ১০ হাজার টাকা নির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছে।”

ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি থ্রিজি মোবাইল সার্ভিস প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই ব্যবস্থা ১৭ লাখ টেলিটক মোবাইল এবং ৪৮ লাখ টুজি মোবাইল গ্রাহককে উন্নত সেবা দেবে।”

প্রধানমন্ত্রী ডাক বিভাগের সেবা আধুনিকীয়নে তার সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করে বলেন, “আমাদের সরকারের সকল ইতিবাচক কর্মকান্ড আগামীতে অব্যাহত রাখতে হবে এবং এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রত্যেকের প্রয়াস সম্পৃক্ত করতে হবে।”

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজু প্রধানমন্ত্রীকে গত দু’বছরে টিএসএস উদ্ভাবিত চার ধরণের দোয়েল ল্যাপটপ কম্পিউটার ও আনুসঙ্গিক সরঞ্জাম উপহার দেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন