Sahab Uddin
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সেনা সদস্যদের মারধরে এক পর্যটক ও দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত পর্যটক মোঃ হানিফকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টার
দিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে। ওই পর্যটক নারায়নগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ কলেজ রোড এর বাসিন্দা কালু মিয়ার পুত্র বলে জানা গেছে। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সেনা সদস্যদের মারধরে এক পর্যটক ও দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত পর্যটক মোঃ হানিফকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টার
এ ঘটনায় আহত পর্যটক মোঃ হানিফ এর বোন লিলি আকতার গতকাল দুপুরে বলেন, আমরা ভাই-বোনসহ চার জন কক্সবাজারে বেড়াতে আসি। গতকাল সকালে সমুদ্র সৈকতের সূগন্ধা পয়েন্টে গোসল করতে নামলে সেখানে কতিপয় উচ্ছৃংখল যুবক তাদের দিকে ফুটবল ছুঁড়ে মারে। আর ফুটবল নিতে এসে তাদের কয়েকজন আমাদের শরীরে হাত দেয়ার চেষ্টা করে । বিষয়টি আমরা আমাদের ভাই মো ঃ হানিফকে জানালে তিনি এর প্রতিবাদ করেন। এসময় ৪/৫ জন যুবক নিজেদের সেনাবাহিনীর লোক পরিচয় দিয়ে বেদম মারধর করে ফেলে রাখে। পুলিশ এসে হানিফকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে তারা পুলিশকেও মারধর করে। পরে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা এসে হানিফ কে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। লিলি আকতার সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এখানে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। একটি সভ্য সমাজে এ ধরনের নির্যাতন কখনো মেনে নেয়া যায় না। কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদ করিম চৌধুরী বলেন, গতকাল সকালে সৈকতে কিছু লোক এক পর্যটককে মারধর করছে জানতে পেরে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে জানা যায় তারা সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে কনস্টেবল কর্মেল প্রিয় চাকমা (২৯) ও জুয়েল হক (২৯) কে মারধর করে আহত করে। সেখানে সার্জেন্ট আদেল গিয়েও তাদের উদ্ধার করতে ব্যর্থ হওয়ার পর আমি সেখানে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। পরে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। জানা গেছে, চকরিয়াস্থ ১ ফিল্ড ব্যাটালিয়নের পাপা ব্যাটারী কোং এর ৫৬ জনের একদল সেনা সদস্য নিয়মিত ট্রেনিং এর অংশ হিসেবে সৈকতে আসেন। তাদের একটি দল সৈকতে ফুটবল খেলছিল। এসময় সাগরের পানিতে গোসল করছিল নারী পর্যটকরা। সেখানে এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। সৈকতের কীটকট ব্যবসায়ী হাসান উল্লাহ বলেন, প্রথমে উশৃংখল একদল যুবক সৈকতে নারী পর্যটকদের যৌন হয়রাণী করে। ওই পর্যটকদের ভাই এর প্রতিবাদ করলে সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে একদল যুবক তাকে বেদম মারধর করে। পরে পুলিশ আসলে তাদেরও মারধর করা হয়। এ ধরনের হলে কক্সবাজারে দেশি-বিদেশী পর্যটক এর উপর প্রভাব্ পড়বে। এসব বিষয়ে সেনা সদস্যদের ওই টীমের ইনচার্জ মেজর মাহমুদ ও মেজর জুলকান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা সাংবাদিকদের জানান, কয়েকজন সেনা সদস্য ফুটবল খেলার সময় বলটি ওই নারী পর্যটকের গায়ে পড়ে। এ নিয়ে হানিফ নামের এক যুবক এক সেনা সদস্যকে ঘুষি মারেন ও মারধর করেন। এসময় সেনা সদস্যদের সাথে ওই যুবককে মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। তবে পুলিশকে মারধরের বিষয়টি তারা এড়িয়ে গেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, দোষী সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কক্সবাজার সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মহসিন বলেন, আহত পর্যটক হানিফের অবস্থা আশংকাজনক। তার হাড়ও ভেঙ্গে গেছে বলে ধারনা করছেন তিনি। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার সেলিম মোঃ জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন, ওই ঘটনায় পুলিশ নিয়ম মতোই জিডি নথিভূক্ত করেছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন