বুধবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১১

মোবাইল পর্ণোগ্রাফি, সামাজিক অবক্ষয় শংকাজনক

Sahab Uddin:
যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম মোবাইল ফোন এখন আর শুধু কথা বলার মধ্যে সিমাবদ্ধ নেই। চীনের সুবাধে ইন্টারনেট, চ্যাটিং, অডিও, ভিডিও সহ সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা সমৃদ্ধ মোবাইল সেটের মূল্য সকলের সাধ্যের মধ্যেই আছে। আকাশ সংস্কৃতি, ইন্টারনেট, মোবাইল, ভিডিও’র মত প্রযুক্তি এখন সবার জন্য অবারিত। নিত্য নতুন বহুরূপি সুযোগ সুবিধা সমৃদ্ধ মোবাইল সেট তরুনদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
মোবাইল সেট নিয়ে সব থেকে বেশী মাতামাতি লক্ষ্য করা গেছে বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে। কখনও প্রয়োজনে কখনও সময়ের সাথে তাল মিলাতে গিয়ে অভিবাবকরা বাধ্য হয়েই অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের হাতে তুলে দিচ্ছে মোবাইল নামক যন্ত্র। কিন্তু কখনও কি অভিবাবকরা চিন্তা করে দেখেছে মোবাইলের পার্শ্ব কিছু অপব্যবহারের কারনে তার সন্তান বিপথগামী হয়ে পড়ছে ?
সম্প্রতি বিভিন্ন পত্রপত্রিকার সংবাদের দিকে একটু নজর দিলেই বোঝাযায় মোবাইল মানুষের নৈতিকতাকে কিভাবে ধ্বংশ করছে। খুন, ধর্ষণ, ইভটিজিং সহ যে সকল ঘটনা অহরহ ঘটে চলেছে তার পিছনে মোবাইলের একটা ভূমিকা বরাবরই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। লেখাপড়া ফাঁকি দিয়ে ফেসবুকে চ্যাট করে কিংবা মোবাইলে কথা বলে কেও কেও রাত পার করে দিচ্ছে। কথা বলার টাকা যোগাতে তারা বিভিন্ন সময় অবৈধ পথে পা বাড়াচ্ছে, হারিয়ে ফেলছে নৈতিক চরিত্র ও চিন্তার মান। তবে সব থেকে শঙ্কাজনক হচ্ছে মোবাইল পর্ণোগ্রাফি। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশ জড়িয়ে পরেছে মোবাইল পর্ণোগ্রাফি বা ব্লু ফ্লিম আশক্তিতে। ইন্টারনেটের সুবাধে এবং বিভিন্ন মোবাইল সাভিসিং সেন্টার থেকে গান ঢুকানোর নামে শিক্ষার্থীরা সুলভেই তাদের মোবাইল ম্যামোরীতে নগ্ন ভিডিও ক্লিপস লোড করে নিচ্ছে। এ সব নগ্ন ভিডিও এক সাথে অনেকে মিলে দেখছে এবং ব্লুটুথ এর সুবাধে তা এক হাত অন্য হাত হয়ে ছড়িয়ে পরছে সবার হাতে হাতে। শুধু তাই নয় ক্লাসের পিছনের ব্রেঞ্চে বসে ক্লাসের সময় শিক্ষকের চোখ ফাঁকি দিয়ে মোবাইলের অপব্যবহারের কথাও শোনাগেছে। ভাবার বিষয় হচ্ছে, এ আশক্তি শুধূ ছেলেদের মধ্যেই সিমাবদ্ধ নেই, মেয়েদের ও একটা বড় অংশ ব্লু ফ্লিম আশক্তিতে জড়িয়ে পরেছে। এর ফলে খুব অল্প বয়সেই ছেলে মেয়েদের মাঝে যৌন আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার কারনে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, ইভটিজিং, আতœহত্যা, অপহরন সহ অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পরছে অল্পবয়সী ছেলে মেয়েরা। আধুনিকতার নামে এই উগ্রআধুনিকতার কোবলে পড়ে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম  দিন দিন ধ্বংশের দ্বারপ্রান্তে এগিয়ে যাচ্ছে। তরুন প্রজন্মকে এই ধ্বংশ থেকে বাঁচাতে তাদের নৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা সব থেকে বেশী জরুরী। পাশাপাশি সন্তানদের মোবাইল সেট কিনে দেওয়ার সময় অভিবাবকদের ও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যাতে করে মোবাইলের অপব্যবহার না হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে যাতে করে ব্যাঙ্গের ছাতার মত গড়ে উঠা সার্ভিসিং সেন্টারগুলো থেকে মোবাইলে পর্ণোগ্রাফি ছড়িয়ে পড়তে না পারে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে মাধ্যমিক পড়–য়াদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোবাইল ব্যবহারের ব্যাপারে বিধি নিষেধের ব্যাপারে সরকারী ভাবে ভেবে দেখার সময় এসেছে। মহাজোট সরকারের অঙ্গীকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে সব থেকে আগে এগিয়ে আসতে হবে আমাদের তরুন সমাজকে। কিন্তু সেই ডিজিটাল প্রযুক্তির অপব্যবহার করে কেও যেন বিপথগামী না হতে পারে সে বিষয়ে আমরা সরকারের সু-দৃষ্টি কামনা করবো।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন