শাহাব উদ্দীন
নতুর বছরেই ডেস্কটপ ও ল্যাপটপসহ বেশির ভাগ প্রযুক্তি পণ্যের দাম বাড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
বিজনেস টাইম, জেডনেট, পিসি ওয়ার্ল্ড, দি গার্ডিয়ান ও চায়না ডেইলি সহ সংশ্লিষ্ট বিশ্বগণমাধ্যম সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, বছরের শুরুতেই অন্তত তিন মাস পিসি বাজারে মন্দাবস্থা বিরাজ করবে। ফলে জানুয়ারিতে ল্যাপটপ সহ অন্যান্য আইটি পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। এ
ক্সেসরিস’র মূল্য বৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি, জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন এবং ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে মূল্যবৃদ্ধির এমন চাপ আসছে বলে অভমত প্রকাশ করেছে বিশেষজ্ঞরা। বিজনেস টাইম, জেডনেট, পিসি ওয়ার্ল্ড, দি গার্ডিয়ান ও চায়না ডেইলি সহ সংশ্লিষ্ট বিশ্বগণমাধ্যম সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, বছরের শুরুতেই অন্তত তিন মাস পিসি বাজারে মন্দাবস্থা বিরাজ করবে। ফলে জানুয়ারিতে ল্যাপটপ সহ অন্যান্য আইটি পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। এ
তবে আগামী মে মাস নাগাদ এ ধারা কিছুটা কমবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তারা।
দক্ষিণ এশিয়ার অত্যন্ত প্রভাবশালী এই CNBC-TV18 প্রকাশিত এক গবেষণা রিপোর্টে এ বিষয়ে বলা হয়েছে, ২০১২ সালে ডেক্সটপ এবং ল্যাপটপ এর মুল্য ৫ শতাংশ, নেটবুক ৬ শতাংশ, অন্যান্য কম্পিউটার যন্ত্রাংশের দাম ৭ শতাংশ হারে বর্তমান মূল্যের চেয়ে বৃদ্ধি পাবে।
গবেষণা রিপোর্টে আরও বলা হয়, কম্পিউটার যন্ত্রাংশের পাশাপাশি নেটওয়ার্কিং ডিভাইস যেমন রাউটার এর ক্ষেত্রে প্রায় ১০ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধি পাবে।
ল্যাপটপের ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির সঙ্গে আইটি এক্সেসরিস এর মূল্য বৃদ্ধির ফলে ২০১২ সালের শুরুতেই প্রযুক্তি পণ্যের মধ্যে এশীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে ল্যাপটপের মূল্য সবচেয়ে বেশি বাড়বে বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন বাজার বিশ্লেষক এবং এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে সম্প্রতি হার্ডওয়্যার ম্যানুফ্যাকচরিইংয়ে শীর্ষে থাকা থাইল্যান্ডের বন্যায় সে দেশের আইটি ইন্ডাস্ট্রির ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। গত মাসে এখানকার সবচেয়ে বড় হার্ডডিস্ক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন ডিজিটাল হার্ডড্রাইভ উৎপাদন প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ইতিমধ্যেই দেশের হার্ডওয়্যার বাজারে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, হার্ডডিস্ক প্রতি দুই থেকে তিন হাজার টাকা বেড়েছে।
বাজার বিশ্রেষকদের হিসেবে চলতি মাসে হার্ডওয়্যার’র মূল্য প্রায় ৭ থেকে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এটা প্রায় ১২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে।
এসম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী আইটি বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনার এর প্রিন্সিপ্যাল রিসার্চ এ্যনালিস্ট স্টিফেন জ্যাকব বলেন, হার্ডওয়্যার এর মূল্য বৃদ্ধির সুদূরপ্রসারী প্রভাবের ফলে আগামী মে ২০১২ পর্যন্ত ল্যাপটপ ও অন্যান্য কম্পিটার এর উপর মূল্য বৃদ্ধির ধারা বজায় থাকবে।
একইভাবে ল্যাপটপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির বাজার দরও এখন বেশ চড়া। এক্ষেত্রে এ ধরনের ব্যাটারি উৎপাদনের জন্য এখনো গোটা পৃথিবী জাপানের উপর নির্ভর করতে হওয়ায় এ অবস্থা থেকে খুব শিগগিরি মুক্ত হবার সম্ভাবনা নেই বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাদের ভাষায়, গত ২০ বছর ধরে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির উৎপাদনে জাপান মোট উৎপাদনে ৬৭ ভাগ উৎপাদন করে সমপরিমাণ বাজার দখল করে আছে। বিপরীতে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার দখলে আছে মাত্র ৩৮.৫ শতাংশ। অর্থাৎ এক্ষেত্রে জাপানের বিপরীতে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি তৈরি করলেও তা একেবারেই নগণ্য। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আরও মাস ছয়েক অপেক্ষা করতে হবে।
সম্প্রতি প্রকাশিত অন্য একটি গবেষণা রিপোর্টে ২০১২ সালে মূল্য বৃদ্ধির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ১২টি পণ্যকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে টিনজাত বা প্যাকেটজাত খাবার তালিকার শীর্ষে থাকলেও দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ক্রয়কৃত পণ্য। আর মূল্যবৃদ্ধির তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ফ্যাক্স মেশিন। একইভাবে তৃতীয় অবস্থানেও রয়েছে আমাদের নিত্য ব্যবহার্য প্রযুক্তি পণ্য ল্যাপটপ-কম্পিউটার। এর পরের ক্রমানুসারে মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় রয়েছে ফিল্ম ও ক্যামেরা, স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল, কম্পিউটার মেমোরি চিপস, অপরিশোধিত তেল, হোটেল রুম ভাড়া, ফাস্ট ফুড, ক্রেডিট কার্ড এবং ভিডিও সিডি বা ডিভিডি ভাড়া।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন