বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১১

নারীদের উপর সার্ভেঃ সেক্স নাকি ফেসবুক?

 শাহাব উদ্দীন
কসমোপলিটন ম্যাগাজিন ২,০০০ নারীর ওপর একটি জরিপ চালিয়েছিল। সেখানে তাদের জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, এক সপ্তাহের জন্য যদি একটি কাজ বন্ধ করতে হয় তাহলে সেটা ফেসবুক নাকি সেক্স? বেশির ভাগ মেয়েই বলেছে, তারা ফেসবুক ব্যবহার বন্ধ রাখবে, সেক্স নয়।
তাদের অর্ধেকের বেশি বলেন, তারা মোবাইল ফোন ছেড়ে দিতে রাজি আছে, আর শতকরা ৭০ ভাগ বলেছে তারা টেক্সট মেসেজ করা ছেড়ে দিতে পারে - যদি সেটা সেক্সের সঙ্গে তুলনা করা হয়।
আবার টেলিনেভ নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানের সার্ভেতে ৫১৪ নারীর মধ্যে শতকরা ৩৩ জন বলেছেন, তারা এক সপ্তাহের জন্য সেক্স বন্ধ রাখতে পারবেন, তবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা বন্ধ রাখতে পারবেন না।
বোঝা যাচ্ছে, নারীরাও দিনে দিনে মেশিনের ওপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে উঠছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে এখুনি চিন্তা করার মতো কিছু ঘটেনি। এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ নারীই তাদের সম্পর্ককে বেশি মূল্য দিয়ে থাকেন। তারা গ গেজেট কিংবা সোস্যাল নেটওয়ার্কিংয়ের পরিবর্তে তাদের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা এবং সেক্সকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেন। তবে কেউ কেউ অনলাইন সম্পর্ক এবং সেক্সের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন— যেখানে তারা মনে করছেন একই সঙ্গে প্রযুক্তিও হচ্ছে, আবার সম্পর্কও থাকছে।
এই কারণে আমরা দেখতে পাচ্ছি, ইন্টারনেট ভিত্তিক সেক্সের পরিমাণ বেড়েই চলেছে।
কিছু দিন আগে প্লেবয় ম্যাগাজিন একটি তথ্য প্রকাশ করেছে— বর্তমানে পর্নোগ্রাফি দেখার পরিমাণ বেড়ে সেটা দাঁড়িয়েছে শতকরা ৭৮ ভাগ, যেখানে তিন দশক আগেও সেটা ছিল মাত্র ৪০ ভাগ। বিবিসি তাদের একটি জরিপের ফলাফল প্রকাশ করেছে। তারা ১৮-২৪ বছর বয়সের ১,০০০ ছেলের ওপর জরিপ কাজ চালিয়েছিল। সেখানে শতকরা ২৫ ভাগ ছেলে তারা যে পরিমাণ পর্নোগ্রাফি দেখে সেটা নিয়ে খুবই চিন্তিত। তাদের ১০ জনের ভেতর ৮ জনই ইন্টারেনেটে পর্নো দেখেন এবং অনেকেই সপ্তাহে ১০ ঘণ্টা এই কাজে ব্যয় করছেন। এই গোষ্ঠীটি হয়তো সত্যি সত্যি সেক্স করা থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন।
এটা ভালো কি মন্দ, সেই বিচারে যাওয়ার সময় এখনও আসেনি। এটা আমাদের অনেকের কাছেই এলার্মিং মনে হতে পারে, কেউ কেউ নাক সিঁটকাতে পারে, কিংবা কেউ কেউ যাচ্ছে তাই বলে এড়িয়ে যেতে পারে। কিন্তু এটা তো ঠিক যে, ইন্টারনেট আমাদের জীবনকে প্রভাবিত করছে, এবং সেটা ঢুকে গিয়েছে আমাদের বেডরুমে, এবং সেক্স লাইফে। এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়, বাংলাদেশেও একটি বিশাল অংশ ইন্টারনেট সেক্সে অভ্যস্ত এবং যতই এর পরিমাণ বাড়বে, আমাদের তার সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করতে শিখতে হবে।
আমরা চাই বা না চাই, এটা আমাদের জীবনের অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এখনও জানি না, এই সামাজিক পরিবর্তন কিভাবে সমাজের ওপর প্রভাব ফেলবে। সেটা সমাজ বিজ্ঞানীরা বের করতে পারবেন। তবে আমরা শুধু বলতে পারি, পরিবর্তন একটা ঘটছে—তার সঙ্গে কিভাবে নিজেকে মানিয়ে নেব, সেটাই মূল কথা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন